বঙ্গে মতুয়া এবং রাজবংশীদের জন্যই মান রক্ষা হলো বিজেপির ?
Advertisement
দক্ষিণবঙ্গে মতুয়া, উত্তরে রাজবংশীদের হাত ধরেই ‘মান’ বাঁচাল বিজেপি
Published by: Abhisek Rakshit | Posted: May 3, 2021 9:01 am| Updated: May 3, 2021 12:27 pm
তরুণকান্তি দাস: উত্তরে রাজবংশী। দক্ষিণে মতুয়া। প্রান্তিক, উপেক্ষিত দুই সমাজ পাশে না থাকলে কি আসনজয়ের এই ‘সংখ্যা—সম্মানটুকু’ জুটত রাজ্য বিজেপির (BJP) কপালে? তাঁদের সমর্থনে ভর দিয়েই একটা সম্মানজনক সংখ্যায় পৌঁছে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। না হলে আসনসংখ্যা হয়তো অর্ধশতকের আশপাশে আটকে যেত পদ্মের। ভোটের ফলাফলের বিন্যাস বলছে, মতুয়া ও রাজবংশী প্রভাবিত প্রায় প্রতিটি আসন জিতেছে বিজেপি। পূর্ববঙ্গ থেকে আসা দুই সম্প্রদায়ের মানুষের প্রভাব রয়েছে এমন এলাকার ভোটবাক্সে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি রাজ্যের শাসকদল। ব্যতিক্রম একমাত্র উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) হাবড়া (Habra)। যেখানে সামান্য ভোটে হলেও নিজের আসন ধরে রাখতে পেরেছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
মতুয়া ভোট ঘরে তুলতে দুই তরফেই দীর্ঘ লড়াই জারি রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার বেশ কিছু আসন জেতা-হারা নির্ভর করে মতুয়া ভোটের উপরে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলির প্রিয় ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি রাজনৈতিক ক্ষমতার টানাপোড়েনে দুই ভাগে বিভক্ত। সেখানকার ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে পারিবারিক টানাপোড়েনের মধ্যে রাজ্যের তরফের উন্নয়নকাজ অব্যাহত। অন্যদিকে আবার বিজেপির তরফেও রয়েছে নানা প্রতিশ্রুতি এবং এনআরসি ইস্যুতে মতুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে বনগাঁর উত্তর ও দক্ষিণ, বাগদা, গাইঘাটা জিতেছে বিজেপি। হাবড়া আসনে সামান্য ভোটে জিতেছেন খাদ্যমন্ত্রী। পাশের জেলা নদিয়ায় রানাঘাট উত্তর—পূর্ব, রানাঘাট দক্ষিণ, কৃষ্ণগঞ্জে মতুয়া ভোটের আধিক্য রয়েছে। সেখানে বিজেপি জিতেছে। মতুয়া নির্ণায়ক শক্তি এমন আসন হরিণঘাটা, কল্যাণী জিতেছে গেরুয়া শিবির। তবে তেহট্টে মতুয়া ভোট পেয়েছে তৃণমূল। মতুয়া সংগঠনের নেতা ধ্যানেশনারায়ণ গুহ বলেছেন, “মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ তো রয়েছে। তারপর নমঃশূদ্র উন্নয়ন পর্ষদ কেন। এই বিভাজন আমরা মানতে পারিনি। ভোটের ফলাফল শাসকদলের বিরুদ্ধে যাওয়ার আরও কিছু কারণ রয়েছে। তাই বিজেপির এই সার্বিক পরাজয়ের মধ্যেও মতুয়াদের ভোট গেরুয়া শিবিরে গিয়েছে।” উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা ভোটেই ভাল ফল করেছিল বিজেপি। তার আগের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে যে কিছুটা হলেও হাওয়া রয়েছে তা বোঝা গিয়েছিল। এবার দেখা গেল রাজবংশী এবং কামতাপুরী সম্প্রদায়ের প্রভাব রয়েছে এমন আসনগুলি হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের।
কোচবিহারের দিনহাটা, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার উত্তর ও দক্ষিণ, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ, আলিপুরদুয়ারের বেশ কিছু আসন জিততে পারেনি তৃণমূল। এসব জায়গায় রাজবংশী ভোটার বেশি। তারাই নির্ণায়ক শক্তি। গ্রেটার কোচবিহার আন্দোলনেও প্রাণ গিয়েছে এখানকার মানুষের। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মন তৃণমূলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাঁকে ফোনে ধরা হলে বলেন, “রাজবংশীরা সকলে রাজ্য সরকারের বিরোধী, ভোটের ফল দেখে তেমনটা ভাবা ঠিক হবে না। আসলে এখানে দলের মধ্যে খুবই ঝামেলা রয়েছে যা ভোটের আগেও মেটানো যায়নি। নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে ভোটের বাক্সে। রাজবংশীদের জন্য রাজ্য সরকার অনেক কাজই করছে। ভোটের কয়েকদিন আগেও দলীয় অফিসে বৈঠক ডেকে সমস্যা মেটানো যায়নি। প্রার্থী—নেতা সবাই এক টেবিলে না বসলে ভোটের পর এর প্রভাব পড়বে।”
#electionresult #bjp_failed_in_bengal #IndiaNews
https://www.facebook.com/111072543588726/posts/511467216882588/?app=fbl
Comments
Post a Comment